প্রার্থী (সুকান্ত ভট্টাচার্য)

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - সাহিত্য কনিকা - কবিতা | NCTB BOOK
2.5k
Summary

এই কবিতায়, লেখক সূর্যের উদ্দেশ্যে একটি আবেগপূর্ণ আহ্বান জানিয়েছেন। তারা শীতের কঠিন সময় কাটানোর জন্য সূর্যের উত্তাপ ও আলো চাইছেন।

লেখকের মতে, কৃষকরা যেমন ধানের কাটার জন্য অপেক্ষা করে, তেমনই তাদেরও শীতের রাতগুলি পার করতে সূর্যের আলো ও উত্তাপের প্রয়োজন। তারা শরীরকে গরম রাখতে নানা উপায়ে চেষ্টা করলেও, একাধিক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

লেখক সূর্যের কাছ থেকে আশার আলো ও উত্তাপ চেয়ে বলছেন, সেই সামান্য উত্তাপে হয়তো তারা সবাই উজ্জ্বল হয়ে উঠতেও সক্ষম হবেন, এবং রাস্তার ধারের অসহায় শিশুটিকেও সহায়তা করতে পারবেন।

     হে সূর্য। শীতের সূর্য।

হিমশীতল সুদীর্ঘ রাত তোমার প্রতীক্ষায়

     আমরা থাকি,

যেমন প্রতীক্ষা করে থাকে কৃষকের চঞ্চল চোখ

     ধানকাটার রোমাঞ্চকর দিনগুলির জন্যে।

     হে সূর্য, তুমি তো জানো,

আমাদের গরম কাপড়ের কত অভাব!

     সারারাত খড়কুটো জ্বালিয়ে,

     এক টুকরো কাপড়ে কান ঢেকে,

কত কষ্টে আমরা শীত আটকাই।

সকালের এক টুকরো রোদ্দুর-

     এক টুকরো সোনার চেয়েও মনে হয় দামি।

ঘর ছেড়ে আমরা এদিক-ওদিকে যাই—

     এক টুকরো রোদ্দুরের তৃষ্ণায়।

     হে সূর্য!

তুমি আমাদের স্যাঁতসেঁতে ভিজে ঘরে

     উত্তাপ আর আলো দিও,

     আর উত্তাপ দিও

রাস্তার ধারের ঐ উলঙ্গ ছেলেটাকে।

     হে সূর্য।

তুমি আমাদের উত্তাপ দিও—

শুনেছি, তুমি এক জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড,

     তোমার কাছে উত্তাপ পেয়ে পেয়ে

একদিন হয়তো আমরা প্রত্যেকেই

এক একটা জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ডে পরিণত হব।

তারপর সেই উত্তাপে যখন পুড়বে আমাদের জড়তা,

     তখন হয়তো গরম কাপড়ে ঢেকে দিতে পারব

     রাস্তার ধারের ঐ উলঙ্গ ছেলেটাকে।

আজ কিন্তু আমরা তোমার অকৃপণ উত্তাপের প্রার্থী

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দাও

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন তরুণ-তরুণী রমনা এলাকার পথশিশুদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে। নিজেদের খরচের টাকা বাঁচিয়ে তাদের চিকিৎসারও ব্যবস্থা করে।

এইসব মূঢ়মান মুখে দিতে হবে ভাষা
হে মহাজীবন, আর কাব্য নয়
খুনের নেশায় আর করিব না আখেরের পথরোধ
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে

শব্দার্থ ও টীকা

488

প্রার্থী — প্রার্থনাকারী, আবেদনকারী।

হিমশীতল — তুষারের মতো ঠান্ডা।

স্যাঁতসেঁতে  — ভেজা ভাবযুক্ত।

অগ্নিপিণ্ড — আগুনের গোলা।

জড়তা — জড়ের ভাব,আড়ষ্টতা।

অকৃপণ — কৃপণ নয় এমন । উদার।

Content added || updated By

পাঠের উদ্দেশ্য

551

এ কবিতা পাঠ করে শিক্ষার্থীদের মনে অবহেলিত, বঞ্চিত ও দীন-দরিদ্র মানুষের প্রতি মমতা সৃষ্টি হবে। অন্নহীন, বস্ত্রহীন ও আশ্রয়হীন মানুষের দুর্দশায় তারা ব্যথিত হবে।

Content added By

পাঠ-পরিচিতি

478

‘প্রার্থী' কবিতাটি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র' কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। আমাদের এই পৃথিবীতে শক্তির মূল উৎস সূর্য। সূর্য যে তাপ বিকিরণ করে তার সাহায্যেই ভূপৃষ্ঠে উদ্ভিদ, জীবজন্তু ও মানুষ জীবনধারণ করে। প্রচণ্ড শীতে সূর্যের এই উত্তাপের জন্য সারারাত অপেক্ষা করে বস্ত্রহীন, আশ্রয়হীন শীতার্ত মানুষ ৷ কৰিব সমাজের নিচুতলার মানুষের প্রতি গভীর মমতা থেকে সূর্যের কাছে উত্তাপ প্রার্থনা করেছেন। অবহেলিত ও বঞ্চিত শিশুর প্রতি তাঁর অসীম মমতা। কবি এই শিশুদের কল্যাণে সূর্যের অবদান থেকে প্রেরণা নিতে চান । তিনি এমন সমাজ গড়তে চান— যাতে বস্ত্রহীন শীতার্ত মানুষের জীবন থেকে সব দুঃখ চিরতরে ঘুচে যায়।

Content added By

কবি-পরিচিতি

668

সুকান্ত ভট্টাচার্য ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায়। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের এই সন্তান অল্প বয়সেই শোষিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করে তোলেন। বামপন্থি-বিপ্লবী কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। বঞ্চনাকাতর মানুষের জীবন-যন্ত্রণার চিত্র যেমন তাঁর কবিতায় অঙ্কিত হয়েছে তেমনি প্রতিবাদ ও বিদ্রোহের সুর উচ্চারিত হয়েছে। তিনি সেকালের দৈনিক পত্রিকা 'স্বাধীনতার কিশোর সভা অংশের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। আমৃত্যু তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর কবিতায় মানবমুক্তির জয়গান বলিষ্ঠভাবে উচ্চারিত হয়েছে। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের নাম : ‘ছাড়পত্র’,‘ঘুম নেই’, ‘পূর্বাভাস’, ‘অভিযান’, ‘হরতাল' ও ‘গীতিগুচ্ছ'। সুকান্ত ভট্টাচার্য ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র একুশ বছর বয়সে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

Content added By

কর্ম-অনুশীলন

1.2k

ক. ‘সামাজিক বৈষম্য জাতীয় অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা' – এই মতের পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কের আয়োজন - করো (দলগত কাজ)।

খ. গত সপ্তাহে কে, কী ধরনের ভাল কাজ করেছ, এর একটি তালিকা তৈরি করে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করো (একক কাজ)।

Content added By
Content updated By

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

785
Please, contribute by adding content to বহুনির্বাচনি প্রশ্ন.
Content

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

উদ্দীপকটি পড়ে ৪ ও ৫ নম্বর প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
লিয়াকতের বাবা অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। সেই থেকে সে প্রচণ্ড শোক বুকে নিয়ে ঢাকা শহরে রিকশা চালিয়ে তিল তিল করে সঞ্চয় করে কিছু টাকা। আর সে টাকা দিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে গড়ে তোলে একটি হাসপাতাল; যাতে কোনো অসহায়, দুঃস্থ মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়।

কৃষকের চঞ্চল চোখ
এক টুকরো সোনা
এক টুকরো গরম কাপড়
এক জলন্ত অগ্নিপিণ্ড

সৃজনশীল প্রশ্ন

477
Please, contribute by adding content to সৃজনশীল প্রশ্ন.
Content
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...